(bn) গুরু সিয়াগ যোগ

বছর দুয়েক বাদে গুরুদেব গঙ্গাইনাথজির ঐশ্বরিক আদেশ পেলেন যে , তাঁকে রেলের চাকরি ছেড়ে দিয়ে আধ্যাত্মিক মহান উদ্দেশ্য পূরণে সমর্পিত হতে হবে। অবসরের নির্দিষ্ট বয়সকালের প্রায় সাত বছর আগেই ১৯৮৬ সালের ৩০শে জুন গুরুদেব কর্মজীবন থেকে স্বেচ্ছাবসর নিলেন। পরবর্তীকালে তিনি বলেছিলেন — ” আগে আমি রেলের সেবক ছিলাম, আর এখন আমি আমার গুরুর সেবক হলাম। এ এমনই এক জীবনব্যাপী কাজ যে ছাড়ার কোনো উপায় নেই। আমি আমার পরিবারের জাগতিক প্রয়োজন পূরণের বিষয়টি পুরোপুরি ওঁনার ( গঙ্গাইনাথজি ) ওপরেই ছেড়ে দিয়েছি। আমি আমার গুরুর অনুগত সেবক এবং সেই হিসেবে এই ব্রতের লাভালাভ সবই ওঁনার ইচ্ছানুসারে হবে।”

বাবাও সাধারণ মানুষকে শিষ্যরূপে সিদ্ধযোগে দীক্ষা দেবার জন্য গুরু সিয়াগকে আদেশ দিয়েছিলেন। প্রধানত যোধপুরে এবং রাজস্থানের অন্যান্য কিছু শহরে ১৯৯০ সাল থেকে  ‘দীক্ষানুষ্ঠান’-এর আয়োজন করে গুরুদেব দীক্ষাদান শুরু করলেন।যাঁরাই গুরুদেবের সান্নিধ্যে এসে তাঁর শিষ্যে পরিণত হয়েছেন তাঁরা তাঁদের জীবনে এক ইতিবাচক পরিবর্তনের অভিজ্ঞতালাভ করেছেন– তাঁদের রোগব্যাধি কিংবা দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা সম্পূর্ণ সেরে গেছে — দীক্ষাগ্রহণকালে প্রাপ্ত মন্ত্রজপ ও ধ্যান নিয়মিত করবার ফলে তাঁদের আধ্যাত্মিক জাগরণও ঘটে গেছে। গুরুদেবের সিদ্ধযোগের অনন্যতা এবং নিরাময়-ক্ষমতার সংবাদ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়লে অন্যান্য ছোটো-বড় শহরেও গুরুদেব আমন্ত্রিত হলেন এবং দীক্ষানুষ্ঠানের আয়োজন করলেন। তারপর থেকে ভারতবর্ষের বিভিন্ন শহরে এবং ভারতের বাইরে ইজরায়েল এবং আমেরিকাতেও হাজার হাজার মানুষকে তিনি আধ্যাত্মিক বিকাশ ও সুস্বাস্থ্যের পথে দীক্ষা দিয়েছেন।

যদিও তিনি বলেন যে, তাঁর লক্ষ্যের কেবল অর্ধেকমাত্রই সারা হয়েছে। তাঁর বিশ্বাস — যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি বিশ্বের পশ্চিম গোলার্ধের মানুষের কাছে পৌঁছে তাঁদেরকে গঙ্গাইনাথজির প্রদর্শিত মার্গে অনুপ্রাণিত করে যোগের পথে নিয়ে আসতে সক্ষম হচ্ছেন — ততক্ষণ পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রকৃত শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতিষ্ঠা সম্ভবই নয় — ” প্রাচ্যের আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে পশ্চিমের জড়বাদের সমন্বয়সাধন প্রয়োজন, নইলে বিশ্বে দ্বন্দ্ব ও অনৈক্যের অবসান সম্ভব নয়। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের আধ্যাত্মিক যোগের যে-পথ আমি প্রদর্শন করেছি তা-ই বিশ্বে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠাকে বাস্তবায়িত করবে।”

error: Content is protected !!