G.S.Y. অর্থাৎ ‘গুরু সিয়াগ যোগা’। G.S.Y অনুশীলনের উৎপত্তি ঘটেছে ‘সিদ্ধ যোগ’ নামে পরিচিত যোগেরএক সুপ্রাচীন রূপ থেকে। পাশ্চাত্যে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা বহুসংখ্যক যোগকেন্দ্রগুলির কারণে এখন যোগ বলতে কিছু শারীরিক কসরৎ কিংবা দেহকে শক্তিশালী করবার কৌশল বুঝিয়ে থাকে। যদিও প্রকৃত অর্থে ‘যোগ’ শব্দটিতে’ পরমের সঙ্গে একাত্মতা’ বোঝায়।’সিদ্ধ’ শব্দে বোঝায় — যা ‘পূর্ণাঙ্গ’ , ‘নিখুঁত’ অথবা ‘শক্তিমান’। সিদ্ধ যোগ হলো অনায়াসে পরমসত্তার সঙ্গে যুক্ত হবার উপায়। কেবলমাত্র সিদ্ধ ( প্রকৃত) গুরুর কৃপাতেই শিষ্যের কোনোপ্রকার প্রচেষ্টা ছাড়াই এটি প্রাপ্ত হওয়া যায়।
সিদ্ধ যোগ মানবজাতির কাছে যোগ-পরম্পরার অন্তর্গত নাথ সম্প্রদায়ের একটি উপহার। হিমালয়ের দিব্যধামে ভগবান শিবের কাছ থেকে প্রাচীন মুনি মৎস্যেন্দ্রনাথ প্রত্যক্ষভাবে এই যোগের জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছিলেন। দেবাদিদেব শিব সমগ্র মানবজাতির আধ্যাত্মিক বিকাশের জন্য মৎস্যেন্দ্রনাথকে এই জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে আদেশ দিয়েছিলেন। সেই তখন থেকেই জ্ঞান ও প্রজ্ঞাদীপ্ত এই যোগবিদ্যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে গুরু-শিষ্য পরম্পরায় বাহিত হয়ে আসছে। এটি এতই বিশাল যে সকল যোগ-পদ্ধতিই যেমন ভক্তিযোগ , কর্মযোগ , রাজযোগ, ক্রিয়াযোগ, জ্ঞানযোগ, লয়যোগ, ভাবযোগ , হঠযোগ ইত্যাদি সবই এর অন্তর্গত। সেকারণেই একে পূর্ণযোগ বা মহাযোগও বলা হয়ে থাকে।
সিদ্ধযোগ পরমসত্তার সঙ্গে অনায়াসে যুক্ত হবার অন্যতম উপায়। শিষ্যের সামান্যতম প্রয়াস ছাড়াই শুধুমাত্র প্রকৃত সিদ্ধ গুরুর কৃপাতেই এই যোগ প্রাপ্ত হওয়া যায়। ‘অনায়াস’ অর্থাৎ, শিষ্যকে কেবলমাত্র অনুশীলন করে যেতে হয়। তাকে কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের পিছনে ছুটতে হয়না। এতে আধ্যাত্মিক রূপান্তরণ স্বয়ংক্রিয় ভাবেই ঘটে যায়।